আমরা একটা স্বাধীন ভূখন্ডের অধিবাসী – এ কথা ভাবতেই গর্বে বুকটা ভরে ওঠে
। হাজার সালাম সব শহীদ আত্নাকে – যারা আমাদের জন্য জীবন বিসর্জ্ন করেছিলেন
। কিন্তু মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা একটা দুঃখবোধ অজান্তে দীর্ঘ্শ্বাস হয়ে
মুক্তি নেয় । প্রশ্ন জাগে আমরা কি পেয়েছি স্বাধীনতা উত্তর গত হয়ে যাওয়া
প্রায় আটত্রিশ বছরে ।
সঠিকভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, সত্যিকার
অর্থে আমরা অনেক পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীতে পরিনত হয়েছি । অথচ কি নেই আমাদের ?
যে কোন দেশের চেয়ে আমরা অনেক সম্পদের অধিকারী । আমাদের অনেক কিছুই আছে যা
অনেক উন্নত রাষ্ট্রের নেই । তবে কেন আমাদের দেশে এত বেকারত্ব, সন্ত্রাস,
দূর্নীতি ? আমাদের মেধাবীরা কেন পাড়ি জমাবে ভিনদেশে, কেন তাদের উন্নয়নের
কান্ডারী হবে যারা একদা আমাদের শোষন করেছিল ?
উত্তর অজানা নয় । আমরা
সবই জানি-সবই বুঝি-শুধু সঠিক উপলব্ধি নেই । আসলে আমরা এখনো পরাধীনতার
শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে আছি । এই পরাধীনতা মোটেই বাহ্যিক নয় । বরং পুরোটাই
আত্নিক । যুগ যুগ ধরে শাসকের শোষনে, নির্যাতনে জীবন অতিবাহিত করার
ফলশ্রুতিতে আমরা মানসিকভাবে পরাধীন হয়ে পরেছি । আমরা বিস্মৃত হয়েছি আমাদের
পুর্বপুরুষের ঐতিহ্য, আমাদের শৌর্য্-বীর্য্ গাঁথা । বংশ পরম্পরায় আমাদের
অন্তরের অন্তঃস্থলে, অস্থি-মজ্জায় গ্রোথিত হয়েছে অন্যের অধীনস্ত থাকার
প্রবনতা । আমরা এখন মুক্ত-স্বাধীন চিন্তা করার ক্ষমতা পর্যন্ত হারিয়ে
ফেলেছি ।
আমাদের জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় অংশ – সত্যিকার অর্থে প্রায়
সবাই এখন চাকরী নামক একটা বাক্সে বন্দী হয়ে আছি । অন্যের চিন্তাপ্রসূত
সিদ্ধান্তই নিজের অবশ্য করনীয় সেই বাক্সবাসীর । শিশুবেলায় একটু বুদ্ধি
হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শিখিয়ে-পড়িয়ে দেয়া হয় – ভালোভাবে পড়, অনেক ভালো চাকরী
করবে । কেউ বলে না – লেখাপড়া করো, মুক্ত স্বাধীন হবে, অনেক জ্ঞানী হবে ।
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য যেন জ্ঞানার্জ্ন নয় – বড় চাকরী অর্জ্ন । এখানেই
বিপত্তির সূত্রপাত ।
প্রায়ই যাত্রাপথে কাছে বসা অফিসযাত্রীর ফোনালাপ
মনোযোগ সহকারে খেয়াল করি । প্রিয় পাঠক অন্যভাবে নেবেন না – শুধু গননা করি
একজন চাকরীজীবী তার উর্ধ্বতন কর্ম্কর্তাকে কতবার স্যার, ইয়েস স্যার, জি
স্যার সম্বোধন করেন । ভয় নেই সংখ্যাটা এ স্থলে উপস্থাপন করব না । শুধু
এটুকুই বলবো আপনার কি এতটুকুও খারাপ লাগছে না ? মন খারাপ করবেন না । কেননা
ওই উর্ধ্বতন কর্ম্কর্তাকেও আপনি কোনো এক যাত্রাপথে পেয়ে যেতে পারেন ।
হ্যাঁ, তাকেও কারও অধীনেই কাজ করতে হয় । এটাই স্বাভাবিক, অন্তত আমাদের কাছে
স্বাভাবিক বনে গেছে । এটাই আমাদের আর্থ্-সামাজিক বাস্তবতা । আমাদের ভাবনার
গন্ডী কখনই এই চাকরী-বাক্সের বাইরে আসতে পারে না । এরই নাম কি স্বাধীনতা ?
একি বাক্সের আয়তন ছোট থেকে ছোটতর করা নয় – যখন আমরা ছোট চাকরী থেকে বড়
চাকরীতে স্থানান্তরিত হই ?
আরেকটু অগ্রসর হওয়া যাক – এই চাকরী
বাক্সের দুঃসহ গল্প থেকে । প্রিয় পাঠক একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন তো – কেন
চিকিৎসা সেবা থেকে জীবিকা অন্বেষনকারী পেশাতে পরিগনিত হলো ? কিভাবে
জ্ঞানদান একটি সমাজ আলোকিত করা, স্বার্থহীন কর্মকান্ড থেকে উপার্জনের
পন্থায় পর্যবসিত হলো ? কখন ধর্ম্ প্রচার করা, ধর্ম্ শিক্ষা দেয়াতে ইবাদতের
সঙ্গে অর্থলাভ দৃষ্টিভঙ্গি মিশ্রিত হলো ? এরকম অজস্র ধাঁধাঁর জট আমরা সহজেই
খুলতে পারব একটু পেছনে ফিরে তাকালেই ।
শত শত বছর আমরা গোলামী
অনুশীলন করেছি । শুধুই হুকুম তামিল করে এসেছি । কখনো ভাবিনি আমাদেরও ক্ষমতা
আছে সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দেয়ার । ক্রমেই সৃষ্টিশীলতা বিস্মৃত হয়েছি । এত
বছরের সৃষ্ট ধুলার চাদর সামান্য ফুঁ দিয়েই উড়িয়ে দেয়া যাবে, তা নয় । আমাদের
অবশ্যই সময় নিতে হবে – নতুন চিন্তা করতে হবে – মুক্ত চিন্তা । নতুন পথ
অবলম্বন করতে হবে – মুক্তির পথ । যে পথে চলতে অন্যের হুকুম তামিল করার
আবশ্যকতা নেই ।
যেমনটি হেঁটেছিলাম গেঁয়ো মেঠো পথে, ছোটবেলার সেই
মিষ্টি দুপুরে । সব সুখ সেখান থেকে এখনো হাতছানি দেয় । আবার আশা জেগেছে
গ্রামে ফিরে যাব – যেখানে রয়েছে সবার শেকড় । প্রতিষ্ঠা করব এমন একটি
ব্যবস্থা যেখানে অন্যের অধীনে নয়, অন্যের ক্ষতিসাধন নয় – সবাইকে নিয়ে সুখী
হব ।
এমনই এক পথের দিশা পাওয়া গেল ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড এর কাছে । এ
এক অবাক ব্যাপার ! এত বছরেও যা কেউ বলতে পারেনি, করতে পারেনি তাই করার শপথ
নিল একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান । হ্যাঁ, আমি ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড এর কথাই
বলছি । যে প্রতিষ্ঠান একাধিক জাতীয় সমস্যা সমাধানের আধুনিকতম পরিকল্পনা
সম্পন্ন করেছে । ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড একটি শিশুর নাম যার বয়স এখনও আট
পেরোয়নি – তবুও অটল সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই প্রানের বাংলাকে সত্যিকার অর্থে
বিশ্বের দরবারে একটি উন্নততর অবস্থানে অধিষ্ঠিত করার । গত আট বছরের দৃপ্ত
পদচারনাই বলে দেয় – সে পারবে – অবশ্যই পারবে । এখন তাই ডেসটিনি শুধু
বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নয় বরং এটি একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠানে
রূপান্তরিত হয়েছে ।
সব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মূল হাতিয়ার হিসেবে
বেছে নেয়া হয়েছে ডাইরেক্ট মার্কেটিং নামক এমন একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত
এবং বিশ্বনন্দিত পন্য বিপনন ব্যবস্থা যেখানে ভোক্তা তার পন্যের চাহিদা
পূর্ন্ করার পরে একটি সৎ, সম্মানজনক এবং আকর্ষনীয় উপার্জ্ন নিশ্চিত করতে
পারে ।
সুপ্রিয় পাঠক হয়ত ভাবছেন, পন্য বিপনন ব্যবস্থার মাধ্যমে
জাতিগত উন্নয়ন কি আদৌ সম্ভব ? স্বাভাবিক প্রশ্ন । এটি এমনই একটি আধুনিক,
বিজ্ঞানসম্মত এবং শক্তিশালী বিপনন ব্যবস্থা যেখানে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ
প্রয়োগ করা হয়েছে । অচিরেই সম্পৃক্ত করা হবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ইআরপি
(এন্টারপ্রাইজ রিসোর্সিং প্রোগ্রাম)।
এই বিপনন ব্যবস্থায় সমাজের
ভোক্তাশ্রেনী (জাতি-ধর্ম্-বর্ন্-লিঙ্গ-পেশা নির্বিশেষে) নিজেদের এক অতুলনীয়
জীবনধারায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারে । যেখানে অন্যকে সহযোগীতাই ব্যক্তিগত
উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে । কারো অধীন না হয়ে স্বল্প সময়
বিনিয়োগ এবং নিজ মেধা ও যোগ্যতার সমন্বয়ে দ্রুততার সঙ্গে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি
আনয়ন করে জীবীকার জন্য কাজ করার এ এক অতুলনীয় বিপনন পদ্ধতি । জীবীকা
অন্বেষন ছাড়াও আমাদের যে আরও অনেক দায়িত্ব-কর্তব্য আছে – সমাজের ও জাতির
প্রতি, তা উপলব্ধি করা যাবে একমাত্র এই পদ্ধতিতে কাজ করার মাধ্যমে ।
শৃঙ্খল
থেকে এ জাতিকে মুক্ত করার সঠিক পন্থা এই ডাইরেক্ট মার্কে্টিং এবং সুবর্ন্
সময় এখনই । কেননা সারাবিশ্ব আজ এই পদ্ধতিকে আন্তরিকতার সঙ্গে আলিঙ্গন করে
নিয়েছে । বাংলাদেশ যে খুব পিছিয়ে আছে তা নয় । ডেসটিনি আজ আন্তর্জাতিকভাবে
আলোচিত একটি প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশে এখন সুপ্রতিষ্ঠিত । যদিও আসল যুদ্ধ
এখনো বাকি- যে যুদ্ধে আমরাই হতে পারি অগ্রগামী সৈনিক । আমাদের তাই প্রচলিত
ধ্যান-ধারনার জিন্জির থেকে নিজেদের মুক্ত করতে এই পদ্ধতির সঙ্গে একাত্নতা
ঘোষনা করে ডেসটিনির পতাকাতলে আসীন হতে হবে । আর কালক্ষেপন নয় – আর পরাধীনতা
নয় । এখন শুধু মুক্তির গান গাওয়ার সময় । এ মুক্তি মানসিকতার-এ মুক্তি
প্রচলিত বাক্স ভেঙ্গে বের হয়ে আসার ।